পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় পরিকল্পিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। তাকে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনের বিইউ ব্লকের ৫৬ নম্বর ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ টুকরো টুকরো করে ট্রলিব্যাগে ভরে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ফেলে দেয় হত্যাকারীরা।বুধবার এ ঘটনায় এমপি আনারের মেয়ে ডরিন বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেছেন। একই সঙ্গে কলকাতায়ও একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের সূত্র ধরে এমপি আনারকে হত্যার পরিকল্পনা করে আক্তারুজ্জামান শাহীন। এ ছাড়া শিলাস্তি রহমান নামে এক তরুণীও এ ঘটনায় জড়িত।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিলাস্তিকে হানি ট্র্যাপ হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। এরই মধ্যে শিলাস্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
ডিবি সূত্র বলছে, শিলাস্তি রহমান এমপি আনার খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের বান্ধবী। তার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তদন্ত অব্যাহত আছে।
কলকাতার একটি সূত্র জানায়, যে ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে, ১৩ মে সেখানে দুজন পুরুষ ও একজন নারী প্রবেশ করেন। একদিন অবস্থানের পর ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে আসেন এক পুরুষ ও এক নারী। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীই শিলাস্তি রহমান। ১৩ মে তিনি আমানুল্লাহ ও এমপি আনারের সঙ্গে ফ্ল্যাটে ঢুকে থাকতে পারেন।
ঢাকার ডিবি সূত্রও বলছে, তাদের ধারণা ওই নারীই শিলাস্তি রহমান। কারণ তিনি ১৫ মে বিমানে দেশে ফেরেন। তার সঙ্গে দেশে ফেরেন মূল কিলার আমানুল্লাহ।
ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন এমপি আনারকে কলকাতা নিতে এই তরুণীকেই ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। কারণ সব পরিকল্পনা করে শাহীন ১০ মে দেশে ফিরে এলেও শিলাস্তি থেকে যান কলকাতায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সময় শিলাস্তি তিনতলা ফ্ল্যাটের একটি তলায় অবস্থান করছিলেন। তবে সামনে ছিলেন না। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর তিনি নিচে নেমে আসেন। এরপর লাশ গুমে সহায়তা করেন। আমানুল্লাহ ও শিলাস্তি মিলেই এমপি আনারের টুকরো করা লাশ একটি ট্রলি নিয়ে প্রথমে বের হয়েছিলেন বলে তথ্য রয়েছে।’