একটি বাসার জন্য সরকারি আবাসন পরিদপ্তরে আবেদন করে অনেক কর্মকর্তাকে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। তারপর বাসা বরাদ্দ পান না হাজারো কর্মকর্তা। অথচ এক কর্মকর্তা তিনটি সরকারি বাসা দখলে রেখেছেন। বেআইনি ওই কাজটি যিনি করেছেন, তিনি হলেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগের যুগ্ম সচিব শাহিনুর ইসলাম।
ওই কর্মকর্তাকে জরুরি ভিত্তিতে একটি বাসা রেখে বাকি দুটি ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানিয়ে গত ২১ জানুয়ারি চিঠি দেয় আবাসন পরিদপ্তর। সেই চিঠি থেকে জানা যায়, যুগ্ম সচিব শাহিনুর ইসলাম গত বছরের ১ আগস্ট ঢাকায় ইস্কাটন গার্ডেন অফিসার্স কোয়ার্টারের নীহারিকা-২ বাসাটি বরাদ্দ পেয়ে দখল নিয়ে বসবাস করছেন। কিন্তু ঢাকার নিউ সার্কিট হাউসে শাহিনুর ও তাঁর স্ত্রীর নামে আগে বরাদ্দ করা ৪২ ও ৪৩ নম্বর বাসা দুটিও তাঁরা দখলে রেখেছেন। আবাসন পরিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর বুঝিয়ে না দেওয়ায় বর্তমানে বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিরা বাসার দখল নিতে পারছেন না।
এমন পরিস্থিতিতে বাসা দুটির দখল জরুরি ভিত্তিতে হস্তান্তর করে আবাসন পরিদপ্তর থেকে না-দাবি সনদ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে যুগ্ম সচিব শাহিনুর ইসলাম (কালের বেলাকে) বলেন, ‘গত বছর নতুন বরাদ্দ পাওয়া বাসায় উঠেছি। আবাসন পরিদপ্তরের চিঠি পাওয়ার পর আমার বাসাটি ছেড়ে দিয়েছি। স্ত্রীরটি এখনো হস্তান্তর করা হয়নি।’
রাজধানীতে কয়েক লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য বিভিন্ন টাইপের মাত্র ১৪ হাজার বাসা আছে সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসা বরাদ্দসংক্রান্ত বিদ্যমান বিধিমালার বিধান অনুযায়ী, স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই সরকারি কর্মচারী হলে কেবল একজনের নামে বাসা বরাদ্দ পেতে পারেন। কিন্তু শাহিনুর ইসলাম প্রভাব খাটিয়ে নিজের এবং স্ত্রীর নামে নিউ সার্কিট হাউসে দুটি বাসা অন্তত এক যুগ ধরে ভোগদখলে ওই বিধিমালার ১৮ নম্বর বিধিতে উল্লেখ আছে, কোনো সরকারি কর্মচারী অননুমোদিতভাবে কোনো বাসা দখল করলে বা কোনো বাসার দখল বজায় রাখলে, তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার অধীন ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।