কালের বেলা ডেস্ক >>
সিরাজগঞ্জ, ৯ এপ্রিল: সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ঢাকা শিশু হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজের জামিনে মুক্তির পর গণধোলাইয়ের শিকার হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক ও কার্যকর হস্তক্ষেপে তাকে রক্ষা করা হয়েছে। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সেনাবাহিনীর এই তৎপরতা এখন দেশজুড়ে প্রশংসিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর কারাগারের ফটকে অপেক্ষমাণ ছাত্র-জনতার একটি দল তার ওপর হামলা চালায়। মুহূর্তেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ। তবে সেনাবাহিনীর ত্বরিত সিদ্ধান্তে এবং পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে সাবেক এই সংসদ সদস্যকে দ্রুত হেফাজতে নিয়ে আসা সম্ভব হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পরিস্থিতি এতটাই উত্তেজনাপূর্ণ ছিল যে, সেনাবাহিনী দ্রুত হস্তক্ষেপ না করলে বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারতো। সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং দায়িত্বশীল মনোভাবই এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিহত করতে সহায়ক হয়েছে।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া বিস্ফোরক মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বুধবার (৯ এপ্রিল) তাকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর কলাবাগান এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে র্যাব-২ এর সদস্যরা ডা. আব্দুল আজিজকে গ্রেপ্তার করে। এরপর হত্যা চেষ্টা ও বিস্ফোরক মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হয় এবং তিন মাস কারাভোগ করেন। জামিনে মুক্তির ১৬ ঘণ্টার মধ্যেই বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে তাড়াশ থানার একটি বিস্ফোরক মামলায় আসামিকে আমলি আদালতে সোপর্দ করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওমর ফারুক শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহল থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই মানবিক ও সাহসী উদ্যোগের প্রশংসা জানানো হয়েছে। অনেকে বলছেন, দেশ যখন নানা উত্তেজনামূলক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন সেনাবাহিনীর এমন দায়িত্বশীল ভূমিকা দেশের মানুষের আস্থাকে আরও শক্তিশালী করছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এবং মানবিক সঙ্কটে সেনাবাহিনীর এই ধরনের কার্যকর ভূমিকা ভবিষ্যতেও জাতিকে সুরক্ষা দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।