সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজে আর্থিক ক্ষতির কারণ দেখিয়ে মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট এস এস কনস্ট্রাকশন প্রাইভেট লিমিটেড। সিরাজগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদনের মাধ্যমে কাজ বন্ধ করে দেন ঠিকাদার।এর আগে উল্লাপাড়া পৌর-টার্মিনাল সংলগ্ন নগরবাড়ী-বগুড়া মহাসড়কের পাশে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক শিক্ষা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট এস এস কনস্ট্রাকশন প্রাইভেট লিমিটেড গত ২০১৯ সালের ৩ জুন এর নির্মাণ কাজে গণপূর্ত বিভাগের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়।জানা যায়, সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক শিক্ষা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ভবন নির্মাণে প্রায় ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৪ হাজার ৮০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং সিরাজগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগকে এর নির্মাণ কাজ তদারকি ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।গত ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল ওই মডেল মসজিদ ও ইসলামিক শিক্ষা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। নির্মাণাধীন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক শিক্ষা কেন্দ্র ভবনের বেজ ও মূল পিলার নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ায় জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান মসজিদ ভবন পরিদর্শন করেন এবং গত ২০২৩ সালের ২৩ মার্চ ডি ডি এল জি মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেনকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। ওই কমিটি দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে বেজ ঢালাই ও ২৫টি পিলার ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়।
এতে বলা হয়, ব্যাপক অনিয়ম করে এই পিলারগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির নির্দেশনা মোতাবেক ২৫ পিলার ভেঙে নতুন করে আবার সবগুলো পিলার নির্মাণ করার নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী ঠিকাদার পিলারগুলো নির্মাণ করেন। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতি হয়। ইতিমধ্যে মডেল মসজিদ ভবন নির্মাণ কাজ বেশ এগিয়ে আনা হয়েছে।
প্রায় দেড় মাস হলো মসজিদের নির্মাণ একেবারে বন্ধ রয়েছে। এখানে নির্মাণ সামগ্রীর কোনো কিছু আর নেই। শুধু পাহাড়া দেওয়ার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আজিজ মোল্লা নামের একজন কেয়ার টেকার রয়েছেন।
জানতে চাইলে আজিজ মোল্লা তিনি বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে বলা হয়েছে তারা এর নির্মাণ কাজ আর করবেন না। পরবর্তীতে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান এর নির্মাণ করতে আসলে তার দায়িত্বে থাকা সবকিছু তাদের বুঝিয়ে দেবেন বলে জানান তিনি।প্রকৌশলী মো. মাহমাদুল হাসান এ বিষয়ে জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর্থিক ক্ষতি দেখিয়ে একটি লিখিত আবেদন দেন। তার আবেদনটি যথাযথ নিয়ম মাফিক উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠালে তা মঞ্জুর হয় এবং কাজ বাতিল করে বাকি কাজের জন্য পুনরায় টেন্ডারের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে ওই মডেল মসজিদ নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে জানান তিনি।