সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির শ্রমিকদের তালিকায় চেয়ারম্যান,মেম্বার ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও আত্মীয়স্বজনের নাম রয়েছে। তবে তাঁরা কেউ কাজ করেন না। কাজ না করে উত্তোলন করেন কাজের টাকা। অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় প্রতিদিন হাজিরা বাবদ ৪০০ টাকা করে ৪০ দিনে ১৬ হাজার টাকা পারিশ্রমিক পাওয়ার কথা। তালিকা থেকে জানা গেছে, শ্রমিকের তালিকায় ধুবিল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছানোয়ার হোসেনের তারিকুলের নাম রয়েছে ভিআইপি হিসেবে । ধুবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রাসেল তালুকদারের ভিআইপি হিসেবে নাম রয়েছে আলেয়া,
মাহেলা খাতুন,৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি সিদ্দিকের ছেলে মেহেদির নাম রায়েছে ভিআইপি হিসেবে,ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ছোবাহানের (ভাগ্নে) ভিআইপি হিসেবে নাম রয়েছে সুবলের,ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা ঝাউল গ্রামের ছালামের ছেলে আতিকুলের ভিআইপি হিসেবে নাম রয়েছে। শুধু তাই নয় প্রতিটা প্রকল্পে রয়েছে চেয়ারম্যানের ২ জন করে ভিআইপি নাম,মেম্বার ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের আত্মীয় স্বজনদের নাম।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়,বেতুয়া গ্রামের কোরবান এর বাড়ি থেকে পশ্চিমপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত একটি কাঁচা রাস্তার কাজ করছেন ১৭ জন শ্রমিক। অথচ এ কাজে ২৭ জন থাকার কথা। রাস্তায় শুধুমাত্র ছোট-বড় গর্ত ভরাট করা হয়েছে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছানোয়ার হোসেন কর্মসূচির শ্রমিকেদের দিয়ে তার নিজ পুকুরের মাটি কেটে পুকুরের পাড় সংস্কার করছেন।
সুপারভাইজার আহম্মেদ আলী জানান, ১৯ জন নিয়মিত কাজ করেন। বাকিদের মধ্য চেয়ারম্যান,ইউপি সদস্য,ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতাদের নাম রয়েছে। তাঁরা কাজ করতে আসেন না। মালতিনগর কবরস্থান ও মাসুদের দোকান হইতে পান্নার বাড়ি হয়ে শহিদুল মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত সড়কে শ্রমিক পাওয়া যায় ২৪ জন। এ রাস্তায় ৩৪ জন শ্রমিক কাজ করার কথা।
কালিবাড়ি ওয়াহাবের বাড়ি হইতে জলিল হাজির বাড়ি পর্যন্ত শ্রমিক ২৯ জন থাকার কথা থাকলেও পাওয়া যায় ১৪ জন।
চৌধুরী ঘুঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হইতে হরি চৌকিদার খেয়া ঘাট পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের জন্য ২৭ জন শ্রমিক থাকার কথা থাকলেও পাওয়া যায় ১৮ জন।
স্থানীয় ইজিবাইক চালক আল আমিন বলেন, এই রাস্তা দিয়ে ঠিকমতো চলাচল করা যায় না। কয়েক দিন আগে মাটি কেটেছে মাত্র। সেটাও খুব সামান্য। রাস্তায় এখনো বড় বড় গর্ত রয়েছে।
শ্রমিকেরা বলেন, গত ৩১ দিন ধরে সব পরিশ্রম তাঁরা করছেন। কিন্তু সময়মতো টাকা পান না। আর নেতারা কাজ না করেও টাকা নিয়ে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শ্রমিক বলেন, প্রত্যেক প্রকল্পে ১৫ থেকে ১৮ জন করে প্রকৃত শ্রমিক রয়েছে। তাঁরাই সব সময় কাজ করেন। বাকিদের নাম তালিকায় থাকলেও তাঁরা নেতা বা তাঁদের আত্মীয়। ধুবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান তালুকদার রাসেল জানান, যারা কাজ করছে না তাদের অনউপস্থিত দেখানো হচ্ছে। উপজেলা থেকে তাদের বিল দিবে না।রায়গঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী বলেন,এমন অভিযোগে অনউপস্থিত দেখিয়ে বিল দেওয়া হচ্ছে। যারা কাজে আসে নাই বা কাজ করছে না তাদের কাজের বিল দেওয়া হবেহ না।