শাহরিয়ার মোরশেদ,সিরাজগঞ্জ>>
বেশ উন্নত ও জনবসতি এলাকা। যোগাযোগ মাধ্যমও ভালো। কাগজ-কলমে শিক্ষার্থী থাকলেও কিন্তু বাস্তবে নেই। শ্রেণিকক্ষে শূন্য শিক্ষার্থী। তবুও ৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন। আর স্কুল মাঠ যেন গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এমনি এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেখা মেলে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নে। বিদ্যালয়টির নাম- দাদনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।’ সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির সবগুলো শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থী শূন্য। বেঞ্চগুলো এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। শুধু অফিস কক্ষে ৩ জন শিক্ষিকা কে খোসগল্পে মেতে থাকতে দেখা যায়। এই চিত্র প্রতিকার্য দিবসের। হেডমাস্টার জরুরী কাজে বাইরে আছেন। সেখানে কর্মরত ওয়াশ ব্লকের মিস্তিরিরা জানান, তারাও গত ছয় দিন যাবৎ কাজ করছেন তবে গত ছয় দিনে কোন ছাত্রছাত্রীর দেখা মেলেনি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইরফান আলী ও সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা নাদিয়া সুলতানার নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারনে শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা এই প্রতিষ্ঠানটির । এ ছাড়া ভূমি দাতার ছেলে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও তার স্তী সহকারী শিক্ষিকা ও সাবেক প্রধান শিক্ষকের অনেক আগে থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক দ্বন্দ্ব অব্যাহত থাকায় অনেক আগে থেকেই শিক্ষার্থী শুন্য হয়ে পরেছে বিদ্যালয়টি । এর আগেও শিক্ষার্থী শুন্যর বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছে। কাগজ-কলমে ৫৪ জন শিক্ষার্থী দেখানো হলেও বাস্তবে ৮-১০ জনও পাঠগ্রহণ করে না। তাও আবার স্কুলে আসে না কেউই। তবে শিক্ষার্থী হাজিরা খাতায় সন্তোষজনক উপস্থিতি দেখানো হয়। কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থী ছাড়াই চলছে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। এতে করে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে অভিভাবক ও স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ,শিক্ষার্থী শূন্য প্রতিষ্ঠানে কীভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান করা হচ্ছে সেটি বোধগম্য নয়। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাদিয়া সুলতানা বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই তা তো দেখতেই পারছেন । ধান কাটাকাটি শুরু হয়েছে তাই বাচ্চারা স্কুলে আসে না । আমরা কি করব আমাদের আসতেই হয়। তিনি সভাপতির স্ত্রী কিনা জানতে চাইলে তিনি কথা এরিয়ে জান। সাইমা সুলতানা নামের আরেক সহকারী শিক্ষিকা বলেন, ‘শিক্ষার্থী শুন্য দেখতেই তো পাচ্ছেন,এটা অস্বীকার করার কিছুই নেই, প্রতি ক্লাসে দুই তিন জন করে তাও আসেনা ।আমি নতুন এসেছি তবে অনেক আগেই থেকে দ্বন্দ্বের কারনে এখানে কেউ শিক্ষার্থীদের দেয় না । এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইরফান আলী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, সেগুলো সত্য নয়। শিক্ষার্থী আছে এখন নেই খন্দের সময় তাই কেউই আসে নাই। পূর্বে থেকেই একটা দ্বন্দের কারনে শিক্ষার্থী একটু কম। উল্লাপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন হোসেন বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানের এমন অবস্থা সেটি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা বলেন, প্রতিষ্ঠানটির খোজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।