এত গরম কেন পড়ছে? গরম কমছে না কেন? বৃষ্টির দেখা মিলছে না কেন? কী হয়েছে আবহাওয়ার! দেশজুড়ে বয়ে চলা তাপপ্রবাহ নিয়ে মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন আর বিস্ময় তৈরি হয়েছে। তবে বিশ্বের অনেক বড় বড় গবেষক আগেই বলে রেখেছিলেন, এবার রেকর্ড গরম পড়তে পারে। গত বছরই বিশ্বজুড়ে মানুষ গরমে হাঁসফাঁস করেছে। বিজ্ঞানীরা তখনই বলেছিলেন, এই অবস্থা থেকে পৃথিবীবাসীর সহজে মুক্তি মিলছে না। গরমের তীব্রতা কতটা ভয়াবহ হতে পারে সেটা বাংলাদেশের মানুষ এপ্রিলজুড়েই টের পাচ্ছে। পয়লা এপ্রিল যে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে সেটা এখনো অব্যাহত আছে। দীর্ঘদিন ধরে তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটা একটা রেকর্ড। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গত ৭৬ বছরেও এত দীর্ঘ সময় ধরে তাপপ্রবাহ বইতে দেখা যায়নি। তাপপ্রবাহ শুরু হওয়ার আগে চৈত্র মাসে দেশে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হতে দেখা গেছে। এবার শীতের তীব্রতাও ছিল আলোচনার বিষয়। জলবায়ু ওলটপালট হয়ে গেছে পৃথিবীজুড়েই। মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে প্রবল বৃষ্টিতে অস্থায়ী বন্যা দেখা দিয়েছিল কিছুদিন আগে। বিজ্ঞানীরা বলছে, পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এর জন্য মানুষের দায় দেখছেন পরিবেশবিদরা। শিল্পায়ন হচ্ছে, গাছপালা ও বনভূমি কমছে, মানুষের আধুনিক জীবনযাপনও অনেক বিপদ ডেকে এনেছে। গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমনে জলবায়ু বদলে যাচ্ছে দ্রুত। পরিবেশকে রক্ষা করে উন্নয়ন করা যায় কীভাবে সেটাই এখন বিশ্বনেতাদের চিন্তার বিষয়। তবে শিল্পোন্নত অনেক দেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলায় কাক্সিক্ষত ভূমিকা পালন করছে না। এর খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশের মতো দেশকে। জলবাযু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের খাবার, পানি ও স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিয়েছে। পরিবেশ বিপর্যয় রোধে বিশ্ববাসীকে একযোগে কাজ করতে হবে। কোনো একটি দেশের পক্ষে এই বিপদ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উন্নত দেশগুলোকে গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বের করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। বাংলাদেশকেও বসে থাকলে চলবে না। অভ্যন্তরীণ পরিবেশ রক্ষায় নিজেদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করতে হবে যথাযথভাবে। বন রক্ষা করতে হবে, গাছ লাগাতে হবে। জলাশয় রক্ষা করা জরুরি। জলবায়ুর প্রভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানুষ কীভাবে মানিয়ে চলতে পারে সেই উপায় খুঁজতে হবে।