মঙ্গলবার , ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সলঙ্গায় অটোচালক আমিরুল হত্যা রহস্যের জট খুলল গোয়েন্দা পুলিশ : মূলহোতা সহ তিনজন গ্রেফতার

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক >>

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানায় অটো মিশুকচালক আমিরুল ইসলাম হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং নিহতের লুণ্ঠিত অটো মিশুকের যন্ত্রাংশ ও ব্যাটারিসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত আমিরুল ইসলাম (২০) সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার অলিদহ গ্রামের মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে। তিনি গত ৫ আগস্ট দুপুরে অটো মিশুক নিয়ে ভাড়া মারার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু রাতেও বাড়ি না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। পরে তারা সলঙ্গা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রি করেন।

দীর্ঘদিন কোনো খোঁজ না পেয়ে গত ১৮ অক্টোবর বিকেলে সলঙ্গার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চক নিহাল উত্তরপাড়া গ্রামের একটি ডোবার কচুরিপানার নিচে অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। পরে নিহতের মা কাপড় দেখে লাশটি তার ছেলে আমিরুল বলে শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় সলঙ্গা থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের হয়।

পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোঃ হাফিজুর রহমান ও রায়গঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে, জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মোঃ একরামুল হোসাইন, পিপিএম-এর তত্ত্বাবধানে ডিবির একটি চৌকস টিম তদন্তে নামে। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে নেতৃত্ব দেন এসআই (নিঃ) মোঃ নাজমুল হক, বিপিএম।

অবশেষে পুলিশের নিপুণ তদন্তে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়। গ্রেফতার করা হয় তিনজনকে
১. মোঃ সাহেব আলী প্রামানিক (২৫), পিতা-মৃত সোহরাব আলী, চক নিহাল, সলঙ্গা;
২. মোঃ আব্দুল আজিম প্রাং (৩১), পিতা-মৃত আব্দুল বাহের, ওয়াসিন, তাড়াশ;
৩. মোঃ মনিরুজ্জামান সরকার (৪৪), পিতা-মৃত শাহজাহান আলী, চক নিহাল, সলঙ্গা।

তাদের স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে, পুলিশ নিহত আমিরুলের লুণ্ঠিত অটো মিশুকের হ্যান্ডেল, মিটার, তিনটি টায়ার, লোহার বডি, হেডলাইটসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে মনিরুজ্জামান সরকারের দেওয়া তথ্যে জিন্দিং পাওয়ার প্লাস ও এইচ-পাওয়ার প্লাস ব্র্যান্ডের মোট ৪টি ব্যাটারিও জব্দ করা হয়।

গ্রেফতারকৃত তিন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক হোসেন বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বদা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এ মামলাটি ছিল চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস। তবু আমাদের কর্মকর্তারা পেশাদার দক্ষতায় অল্প সময়েই রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছেন।

এ ঘটনায় এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।