বিনোদন প্রতিবেদক ঢাকা >>
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের গর্ব, গায়ক ইমন খান। দেশের সংগীতাঙ্গনে এক উজ্জ্বল নাম, যিনি তাঁর সংগীতযাত্রার শুরু থেকে আজ অবধি হৃদয়ের গভীর ভালোবাসায় ধারণ করে আছেন আরেক গায়ক মনির খানকে। সেই ভালোবাসা কেবল শ্রদ্ধা নয়, ছিল অশ্রুসিক্ত অনুভব, ছিল রাতভর গানে ডুবে থাকা এক তরুণের নিঃশব্দ প্রস্তুতি।
‘আজও প্রতি রাত জেগে থাকি তোমার আশায়’ খ্যাত এই গায়ক নিজের গানের প্রেরণা পেয়েছেন মনির খানের গান থেকে। যিনি গান শোনে শুধু শেখেননি, বরং মনের অজান্তেই বহুবার হু হু করে কেঁদেছেন। কণ্ঠে এসেছে বুকভেজানো সুর। ইমন বলেন, “মনির ভাইয়ের গানই আমাকে গানের জগতে প্রবেশ করিয়েছে। তাঁর প্রতিটি গান যেন আমার জীবনের গল্প বলত। সেই আবেগ থেকেই গান শিখেছি, গাইতে শিখেছি।
ইমনের কৈশোর-তারুণ্য কেটেছে মনির খানের অ্যালবাম সংগ্রহ আর গানের কথা মুখস্থ করার মধ্য দিয়ে। “তাঁর গানগুলোই আমার সংগীত শিক্ষার পাঠ্যবই ছিল, বললেন ইমন। ‘তোমার কোনো দোষ নাই’ আমারই তো দোষ’ খাঁচা ছেড়ে যায় রে পাখি’ কিংবা ‘এই চোখ অন্ধ করে দাও’-মনির খানের এসব গান শুনে একদিন স্বপ্ন দেখেছিলেন ইমন, তিনিও একদিন গাইবেন। সেই স্বপ্নই সত্যি হলো ২০০৮ সালে, যখন প্রকাশ পেল তাঁর প্রথম অ্যালবাম।
স্মৃতির পাতা থেকে তুলে আনেন এক আবেগঘন মুহূর্ত-যখন মগবাজারে হঠাৎ দেখা হয়ে যায় প্রিয় গায়ক মনির খানের সঙ্গে। তখনও ইমন ছিলেন অপ্রকাশিত শিল্পী। “ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হতেই বললাম আমি আপনার ভক্ত। তিনি আশীর্বাদ করলেন, বললেন পরে আসতে। সেই শুরু, তারপর থেকে তাঁর স্নেহ, ভালোবাসা এখনো পাই।
ইমন খান বলেন, “ভাইয়ের গান আজও আমাকে নাড়া দেয়। তাঁর সুর আমার জীবনের অংশ। আজ আমি গান গাই, মানুষ আমাকে চেনে-সবকিছু শুরু হয়েছিল সেই গভীর ভালোবাসা থেকে।
মনির খানের জন্মদিনে এবার ইমন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখলেন, ‘শুভ জন্মদিন গুরুজি, আপনার গান শুনে মনের অজান্তে হু হু করে কেঁদে বুক ভাসিয়েছি।’ পরে মনির খান সেই পোস্টটি নিজেই শেয়ার করে ধন্যবাদ জানান ইমনকে। ইমনের ভাষায়, “ভাই যখন আমাকে নিয়ে দুই লাইন লিখলেন, সেটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
এতদিনে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার এ গল্প পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে। ইমন জানান, শিগগিরই একটি বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে গুরু-শিষ্যের যুগল গানে শোনা যাবে তাঁদের। “এই গানটি আমাদের সম্পর্ক, আমাদের সংগীতপথের এক স্মারক হয়ে থাকবে, বলেন ইমন।
উল্লাপাড়ার বাঙ্গালা ইউনিয়নের এই সন্তান আজ জাতীয় সংগীত জগতে নিজের পরিচয় গড়েছেন। শুধু গান নয়, তিনি হয়ে উঠেছেন নিজের উপজেলার জন্য গর্বের নাম। তাঁর শিল্পীসত্তা, শৃঙ্খলা ও শ্রদ্ধাশীলতা আজকের তরুণদের জন্য এক অনুকরণীয় পথ।