কালের বেলা ডেস্ক >>
শিক্ষার দাবি, এবার মহাসড়কে। নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালন করলো সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ। সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে সরাসরি ক্লাস নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এসময় পাঁচটি বিভাগের মোট ১২টি ক্লাস পরিচালিত হয় সড়কের ওপরেই, আর তাতে অংশ নেন শতাধিক শিক্ষার্থী।
সকাল থেকে মহাসড়কের একাংশে ছাউনি টানিয়ে তৈরি করা হয় খোলা শ্রেণিকক্ষ। শিক্ষকের পাঠদান আর শিক্ষার্থীদের মনোযোগী শ্রবণে যেন শহরের কোলাহলও থেমে যায় কিছু সময়ের জন্য। কার্যত, এই প্রতীকী ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেমন তাদের দাবি জানানোর অভিনব উপায় খুঁজে পেয়েছেন, তেমনি জনসাধারণের নজরও কাড়তে সক্ষম হয়েছেন।
২০১৬ সালে কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া ২২৫ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে শহরের কয়েকটি ভাড়া করা ভবনে-যেখানে নেই পূর্ণাঙ্গ শ্রেণিকক্ষ, গবেষণাগার বা আবাসন সুবিধা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই ৫১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে, যা একনেকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা তুলে প্রকল্পটির বিরোধিতা করেন বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। শিক্ষার্থীদের দাবি, তার নেতিবাচক প্রতিবেদনই প্রকল্পটি অনুমোদনে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে ক্যাম্পাসের দাবির পাশাপাশি এখন শিক্ষার্থীরা উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিও তুলেছেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণকাজ শুরুর ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এ ধরণের প্রতীকী কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে। এতে যেমন শিক্ষার ব্যাঘাত হচ্ছে, তেমনি শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপও বাড়ছে বলে দাবি করেন তারা।
এই কর্মসূচির কারণে মহাসড়কে সাময়িক যানজটের সৃষ্টি হলেও, সচেতন নাগরিকদের অনেকে শিক্ষার্থীদের দাবিকে যৌক্তিক বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, যেখানে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হয় রাস্তায়, সেখানে উন্নয়নের গল্প কিছুটা ফিকে হয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা কবিগুরুর নামের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, অথচ আজ আমাদের ক্লাস হয় কখনো কলেজের বারান্দায়, কখনো ভাড়া বাড়ির ছাদে। এখন বাধ্য হয়েই আমরা মহাসড়কে ক্লাস করতে নেমেছি, যেনো আমাদের কষ্টটা চোখে পড়ে নীতিনির্ধারকদের।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস দ্রুত নির্মাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহল। অন্যথায় শিক্ষার মান ও পরিবেশে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।