শুক্রবার , ২৩শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ২৪শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

আয়নাঘরের গোপন অধ্যায় ফাঁস: বন্দিদশার ভয়াবহ বর্ণনায় নড়েচড়ে বসেছে রায়গঞ্জ

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫

কালের বেলা ডেস্ক >>

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত এক ব্যক্তিগত বাড়ির রহস্যজনক কাহিনি অবশেষে পর্দার আড়াল থেকে প্রকাশ্যে এল। দুইজন নারী ও পুরুষকে দীর্ঘদিন ধরে বন্দি করে রাখার ঘটনায় আলোচিত বাড়ির মালিক সুমন সেখ আদালতে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেলে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে সুমন জানান, পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাত ওই বাড়ির নিচতলায় দুটি কক্ষ তৈরি করে ভাড়া নেন এবং সেখানেই মানববন্ধি-বিচ্ছিন্ন জীবন কাটাতে বাধ্য হন শিল্পী বেগম (৪৮) ও আব্দুল জুব্বার (৭৫)।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক নাজমুল হক রতন জানান, সোমবার রাতে সদর উপজেলার বহুলী বাজার এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন আদালতে হাজির করার পর প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন বিচারক আলমগীর হোসেন। জবানবন্দি শেষে সন্ধ্যায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তারকৃত সুমন জানায়, আরাফাত নিয়মিত ওই আয়নাঘরে যাতায়াত করতেন এবং আরও ২-৩ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিও তাদের সহযোগী ছিল। সুমন নিজেই বন্দিদের খাবার সরবরাহ করতেন। বর্তমানে তিনি দুটি পৃথক অপহরণ মামলার আসামি।

উল্লেখ্য, ১ মে গভীর রাতে ভয়াবহ সাহসিকতায় বন্দিদশা থেকে পালিয়ে আসেন শিল্পী বেগম ও আব্দুল জুব্বার। নিজেদের তৈরি একটি সরু সুড়ঙ্গ পথ তাদের মুক্তির একমাত্র রাস্তা হয়ে ওঠে। পরদিন গ্রামবাসীর মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং অভিযুক্তদের বাড়িতে বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, শিল্পী বেগমকে ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর এবং আব্দুল জুব্বারকে ৮ নভেম্বর অপহরণ করা হয়েছিল। তাদের স্বজনরা—মনসুর আলী ও শফিকুল ইসলাম—আলাদাভাবে থানায় মামলা করেন।
বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।